THREE DONKEYS IN QURAN BAN-By Syed Wali
Three Donkeys in Quran Ban
By Syed Wali
পবিত্র কুরআনের জ্ঞান অর্জন এবং
কুরআনের দৃষ্টিতে 'তিন গর্দভ'
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ দৃষ্টান্ত হিসাবে "গর্দভ" শব্দটি মোট তিনবার তিনটি পৃথক আযাতে উল্লেখ করছেন। একজন মানুষের কর্মকান্ড আল্লাহর কাছে কখন গর্দভের কর্ম হিসাবে বিবেচিত হয় -এ তিনটি উদাহরনের মাধ্যমে মানুষকে তিনি জানিয়েছেন।
১. "যাহাদিগকে তাওরাতের দায়িত্বভার দেওয়া হইয়াছিল কিন্তু তাহরা উহা বহণ করে নাই তাহাদের দৃষ্টান্ত পুস্তক বহনকারী গর্দভ। কত নিকৃষ্ট সে সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত তাহারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। আল্লাহ জালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।" (৬২ঃ ৫)
লক্ষ্য করুন: বহু মানুষ আছেন যারা কিতাবীদের মত আল্লাহর প্রদত্ত গ্রন্থ স্রেফ একটি পুস্তক হিসাবে বহন করছেন, সে গ্রন্থের জ্ঞান, উপদেশ, আদেশ গ্রহন না করে মুলত: কিতাবের আয়াত/বাণীই অস্বীকার করছেন। যে পুস্তক বহন করা হয় অথচ সে পুস্তকে কি বলা হয়েছে, কেন বলা হয়েছে তা জানে না সৃুতরাং তার কিছুই গ্রহন করা হচ্ছে না, নিজ কর্মকান্ডে প্রতিফিলত করা যাচ্ছে না - এমন কাজটি যারা করেন তারা আল্লাহর দৃষ্টিতে স্রেফ গর্দভ। তরা গর্দভের মতই কাজ করছেন। আমরা কি নিজেকে প্রশ্ন করতে পারি: আমি-আপনি কি করছি? কুরআনকে কি শুধু কাগজের বস্তা হিসাবে গাধার মত বহন করছি না-কি সে গ্রন্থের জ্ঞান অর্জন করে নিজ কর্মকান্ডে প্রতিফলিত করার চেষ্টায় রত?
২. "তুমি পদক্ষেপ গ্রহণ করিও সংযতভাবে এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করিও; নিশ্চয়ই স্বরের মধ্যে গর্দভের স্বর সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।" (৩১: ১৯)
(খুব সহজ বাক্য। আমরা যখন র্ধমের সপক্ষেই হোক, ধর্মীয় কর্মকান্ডে হােক, স্ত্রী-সস্তানদের সাথে বা পরিবারের আর কোন সদস্যের সাথে , প্রতিবেশীর সাথে বা কর্ম ক্ষেত্রে উচ্চস্বরে বা চিৎকার করে কথা বলি- তখন আল্লাহর দৃষ্টিতে একজন গর্দভে পরিণত হচ্ছি। বিশেষ করে আমাদের দেশে তথাকিথত আলেমদের ওয়াজ মাহফিল খেযাল করুন। আমি-আপনি যাকে আলেম/স্কলার বলি আল্লাহর দৃষ্টিতে তার অবস্থান কি ?)
৩. "উহাদের কী হইয়াছে যে উহারা মুখ ফিরাইয়া লয় উপদেশ (কুরআন) হইতে ? উহারা যেন ভীত সন্ত্রস্ত গর্দভ, যাহা সিংহের সম্মুখ হইতে পলায়নপর। বস্তুতঃ উহাদের প্রত্যেকেই কামনা করে যে তাহাকে একটি উম্মুক্ত গ্রন্থ দেওয়া হোক। না, ইহা হইবার নহে; বরং উহারা তো আখিরাতে ভয় করে না। না, ইহা হইবার নহে, কুরআনই সকলের জন্য উপদেশ। অতএব যাহারা ইচ্ছা সে ইহা (কুরআন) হইতে উপদেশ গ্রহণ করুক।" ( ৭৪ঃ ৪৯-৫৫)
(যারা কুরআনের পরিবের্ত অন্য কোন পুস্তক থেকে ধর্ম বা ধর্মের বিধি-বিধান খুঁজে বেড়ান, তাফসির খুঁজে বেড়ান- এবং সে অনুযায়ী আমল করতে চান বা করছেন তাদের কথা ভাবুন। তাদেরকে যখন কোন কর্মকানডের প্রেক্ষিতে কুরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াত মনে করিয়ে দেওয়া হয় সে দ্রুত কুরআনের আয়াত থেকে প্রসঙ্গ এড়িয়ে অন্য গ্রন্থের বিধান/উদাহরণ হাজির করেন- আল্লাহ তাদেরকে বলেন, "ভীত সন্ত্রস্ত গর্দভ"।আল্রাহ বলেন, কুরআনই একমাত্র উপদেশ গ্রন্থ। মুত্তাকীদের জন্য পথ নির্দেশ । আর সিয়াম পালন হচ্ছে, যাতে সিয়াম পালনকারী মুত্তাকী হতে পারেন। অর্থাৎ সিয়াম পালনে একমাত্র রিওয়াযার্ড হচ্ছে আল্লাহ সিয়ামপালনকারীদের মুত্তাকী হওয়ার পথ সহজ করে দেন, সিয়াম পালনকারীক মুত্তাকী হতে সাহায্য করেন। সিয়াম রমাজান মাসে কারণ আল্লাহ বলেন, এই মাসে মুত্তাকীদের জন্য পথ-নির্দেশ নাজিল হতে শুরু করে। সুতরাং মুত্তাকী হওয়া বা মুত্তাকী হওয়ার পথকে আরো সূদৃঢ়করণে কুরআনের জ্ঞান গ্রহণ এবং সে জ্ঞান নিজ জীবনে প্রতিফলনে এই মাসের গুরুত্ব কি অপরিসীম নয়?
আল্লাহ কুরআনের বহু আয়াতে বলেন: চূড়ান্ত সফলতা একমাত্র মুত্তাকীদের জণ্যই। এর একটি আয়াত: "ইহা আখিরাতের সেই আবাস যাহা আমি নির্ধািরণ করি তাহাদের জন্য যাহারা এই পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করিতে চাহে না। শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য।"
প্রশ্ন হচ্ছে:
আমরা কি কাগজের বোঝা হিসাবে কুরআন বহনকারী গর্দভ হয়ে থাকব নাকি কুরানের জ্ঞান অর্জন করে নিজ জীবনে প্রতিফলনের মাধ্যেম মুত্তাকী হওয়ার সাধনায় নিজেকে এই রমজানে নিয়োজিত করব?
আমরা কি "ভীত সন্ত্রস্ত গর্দভের" মত কুরআন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে "শত রিওয়ার্ডের" প্রলোভনে অন্য পুস্তকের দিকে ঝুকবো?
আল্লাহ আমাদের জ্ঞান দিন।
Comments
Post a Comment